মোঃ নাসিম,স্টাফ রিপোর্টার,-চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে সরকারী নিয়ম কানুনকে বৃদ্ধাংগুলি প্রদর্শণ করে চলছে নবাব ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিকের রমরমা ব্যবসা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাকের ডগায় চরম অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীদের নিয়ে রীতিমত প্রতারণা করা হচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানে।
ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিকে মালিকরা সহজ সরল রোগীদের সাথে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এ যেন ‘আলা দ্বিনের আশ্চর্য প্রদীপ জ্বালানো’র এক যাদুকরি ব্যবসা ! আর এই আলা দ্বিনের আশ্চর্য প্রদীপ দেখে অসৎ, দুর্নীতিবাজ মানুষেরা ঝুঁকে পড়ছেন এ প্রতারণা ব্যবসার সাথে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানাগেছে,নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউপির মল্লিকপুর বাজারে নবাব ক্লিনিক ও ডায়গনস্টি সেন্টার ২০১৫ সালে কার্যক্রম শুরু করে। যাহার লাইসেন্স নঃ ক্লিনিক ৩০৫৫,ল্যাবঃ৬৫৪৫। নবাব ক্লিনিকের লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৭সালে শেষ হয় কিন্তু বর্তমানে নবাবয়ন ছাড়াই চলছে ক্লিনিকের কার্যক্রম । এ ক্লিনিকের,আল্ট্রাসনো, ডায়াগনষ্টিক ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে নেই কোন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক। অথচ ৪/৫ জন চিকিৎকের নাম সাইনবোর্ডে লিখে আকর্ষনীয় করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি নন্দন জায়গায়। আবার ৩/৪ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নাম সাইন বোর্ডে লিখে দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে এ ব্যবসা।
নবাব ক্লিনিকের মালিক রোগী জোগাড়ের জন্য উদ্যেশ্যমুলক ভাবে কিছু ডাক্তারের নাম ঝুলিয়ে রেখেছেন ক্লিনিকের দেওয়ালে। আদৌ ডাক্তার ওই ক্লিনিকে আসেন না বা নিজেও জানেন না যে, তার নাম ওই সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে। এমনও দেখা গেছে, একজন ডাক্তারের নাম প্রায়ই ক্লিনিকের সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে। বেশির ভাগ সময় ‘আনাড়ি ডাক্তার’ দিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা। এমনও অভিযোগ রয়েছে, কখনো ডাক্তারকে মোবাইল ফোনে না পেয়ে ক্লিনিক মালিক নিজেই হয়ে যান ‘সিজারিয়ান’ অথবা ‘এনেসস্থেশিয়া’র ডাক্তার। নবাব ক্লিনিকের মালিক ও কর্মচারীরা বিভিন্ন রোগের কথা বলে রোগিকে কৌশলে ভর্তি করাতে পারলে তো আর কথা নেই, বিভিন্ন মরণ ব্যাধির কথা বলে ওই রোগীকে কার্যতঃ জিম্মি করে চলে নীরব চাঁদাবাজি।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে চলতি বছরে ফতেপুর ইউপির আমলাইন গ্রামের জনৈক এক গর্ভবর্তী মেয়ে বাচ্চা ডেলিভেরী করানোর জন্য নবাব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হয়। পরে ঐ দিন রাতে নবাব ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এমডি কামরুল হাসান নিজেই ডাক্তার সেজে ডিপ্লোমা বিহীন নার্স দ্বারা জনৈক মেয়ের বাচ্চা ডেলিভেরী করে। ভুল চিকিৎসার কারণে জনৈক ঐ মেয়ের বাচ্চা মারা যায়। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকে ঐ ভুক্তভোগী মেয়ে।
এখানেই শেষ নয়! নবাব ক্লিনিকের এমডি কামরুল হাসান একজন গ্রাম্য হোমিও চিকিৎসক এমনটি দাবি করে থাকের তিনি। কিন্তু নবাব ক্লিনিকে এমবিবিএস ডাক্তারের পরিবর্তে কামরুল হাসান অনেক সময় রোগী এলে এমবিবিএস ডাক্তার সেজে যান। নবাব ক্লিনিকে ভর্তি হওয়া এক রোগীর প্রেসক্রিপসানে ক্লিনিকের এমডি কামরুল ডাক্তার লেখা পদবি ব্যবহার করেছেন।
এভাবে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউপির অসহায় সেবা নিতে আসা মানুষদের নানা ভাবে হয়রানি করে সেবার নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা ।
এ বিষয়ে নবাব কিøনিকের এমডি কামরুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবিদেক কে জানান,আমরা নতুন ভাবে ক্লিনিকের নবায়ন করেিেছ। এখানে নিয়মিত ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তবে তিনি প্রতিবেদক কে রিপোর্টটি না করার জন্য মুঠো ফোনে উৎকোচ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃজাহিদ নজরুল চৌধুরির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,নাচোলের নবাব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। নবায়ন ছাড়াই ক্লিনিকটি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে । তাছাড়া ঐ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যাওয়ার নজির রয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা সহ আমাদের নজর রয়েছে এই ক্লিনিকের উপর। নাচোল প্রশাসন কে অনুরোধ করা হয়েছে নবাব ক্লিনিক যাতে কার্যক্রম পরিচালনা না করতে পারে।
Leave a Reply